ভাইরাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স চ্যাটবট চ্যাটজিপিটির মূল প্রতিষ্ঠান ওপেন এআইতে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ভাবছে মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ যেসব কর্মকর্তারা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন, তাদের বরাত দিয়ে খবরটি প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ।
মাইক্রোসফটের বিনিয়োগের ব্যাপারটি এখনও আলোচনার পর্যায়ে আছে এবং মাইক্রোসফট কয়েক বছর ধরে এই বিনিয়োগের কথা ভাবছে। দুটি প্রতিষ্ঠান গত কয়েক মাস ধরে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে মাইক্রোসফটের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মাইক্রোসফট এবং ওপেনআই—উভয় প্রতিষ্ঠানই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

যেসব শর্ত নিয়ে বর্তমানে আলোচনা চলছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, মাইক্রোসফট তাদের বিনিয়োগ পুরোপুরি তুলে আনার আগ পর্যন্ত ওপেন এআই-এর আয়ের ৭৫ শতাংশ নিয়ে নেবে। পুরো বিনিয়োগ তোলার পর প্রতিষ্ঠানটি ওপেন এআই-এর ৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা পাবে।
গত বছরের নভেম্বর মাসের শেষ দিকে ইন্টারনেটে ভাইরাল হয় চ্যাটজিপিটি। এর প্রথম ১০ লাখ গ্রাহক পেতে সময় লাগে মাত্র এক সপ্তাহেরও কম। নির্দিষ্ট বিষয়ে ব্যবহারকারীর সঙ্গে চ্যাটজিপিটি যেভাবে কথোপকথন চালায় এবং যে মানসম্পন্ন উত্তর, রচনা বা বর্ণনা লিখে দেয়, তাতে প্রফেশনাল লেখকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। গুগলের যে প্রধান বিজনেস মডেল, তাকেও চ্যাটজিপিটি হুমকির মুখে ফেলবে কিনা, তা নিয়্রে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে জল্পনা আছে। ওপেন এআই প্রতিষ্ঠা করেছেন এলন মাস্ক এবং সিলিকন ভ্যালি বিনিয়োগকারী স্যাম অল্টম্যান।

নতুন এই প্রযুক্তিটি ওপেন এআই-এর জিপিটি-৩ ল্যাংগুয়েজ মডেলের উপর তৈরি করা হয়েছে এবং এটি গত বছরের শেষদিকে বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোতে বড় বড় শিরোনাম তৈরি করেছে। ওপেন এআই ইতোমধ্যে জিপিটি-৪ মডেল নিয়ে কাজ করছে।
ওপেন এআই এর আগেও ডল-ই নামের একটি ছবি তৈরির আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স বানিয়ে সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। ডল-ই হচ্ছে মুহূর্তের মধ্যে ছবি তৈরির অ্যাপ্লিকেশন। ব্যবহারকারী যেভাবে একটি ছবিকে দেখতে চান, সেই নির্দেশনা দিলে ডল-ই মুহূর্তের মধ্যে ঠিক ওই ছবিটি তৈরি করে দেয়। যেমন- কেউ যদি লিখেন তিনি এমন একটি ছবি চান, যেখানে হাতি আকোশে উড়ছে ও আকাশের রং ছিল লাল। ডল-ই সঙ্গে সঙ্গে এই রকম বেশ কয়েকটি ছবি তৈরি করে দিবে।
ওপেন এআইতে এর আগেও মাইক্রোসফট ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ‘বিং’ নামের তাদের সার্চ ইঞ্জিনেও চ্যাটজিপিটি যুক্ত করার চেষ্টা করছে, যা দিয়ে তারা গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারবে। চ্যাটজিপিটি ব্যবহাকারীর কোনো জিজ্ঞাসার উত্তরে কোনো লিংক না দিয়ে একজন মানুষ যেভাবে উত্তর দেয়, সেভাবে দেওয়ার চেষ্টা করে। এমনকি ফলোআপ প্রশ্নের ক্ষেত্রেও এটি মানুষের স্বাভাবিক কথোপকথনের মতো আচরণ করে, যা গুগলের মতো না। গুগল সাধারণ কোনো জিজ্ঞাসার উত্তরে লিংক সরবরাহ করে।
চ্যাটজিপিটির উত্তরগুলোর নির্ভুলতা নিয়ে যদিও এখনও অনেকের মনেই প্রশ্ন আছে। অল্টম্যান নিজেও স্বীকার করেছেন যে, এটা এখনও পুরোপুরি নির্ভুল উত্তর দিতে পারে না। তবে তারা এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স চ্যাটবটের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।